পড়া মনে রাখুন বৈজ্ঞানিক উপায়ে

পড়া মনে রাখুন বৈজ্ঞানিক উপায়ে
শেয়ার করুন

পড়া মনে থাকে না বা যা পড়ি সব ভুলে যাই; এ সমস্যা ছাত্রছাত্রীদের কমবেশি সবার মধ্যেই আছে। অনেকে সঠিক নিয়মে না পড়ে বেশি পড়েও কয়েকদিন পর তা ভুলে যায়। আবার অনেকে পড়া মনে রাখার জন্য কিছু কৌশল ব্যবহার করে এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অবলীলায় মনে রাখতে সক্ষম হয়। সঠিক কৌশল প্রয়োগ করে না পড়লে পড়া ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে।

পড়া সহজে মনে রাখার কিছু বৈজ্ঞানিক উপায় রয়েছে। স্টাডিইন্টারন্যাশনাল ডটকমের কল্যাণে সেসব জানবো আজ-

বিরতি নিয়ে রিভিশন

কোনো কিছু পড়ার কয়েক ঘণ্টা পর মনে রাখাই দায় হয়ে পড়ে অনেক সময়। জার্মান মনোবিদ হারমান এবিনঘসের মতে, যে কোনো কিছু পড়ার এক ঘণ্টা পর সেটির মাত্র ৪৪ শতাংশ আমাদের মনে থাকে। তাই আমাদের উচিত একটু বিরতি দিয়ে একই বিষয় আবার পড়া। বিরতি দিয়ে বারবার পড়লে অনেক দিন মনে থাকে।

ফাইনম্যান পদ্ধতি

যে কোনো কিছু পড়ার পর তা অন্য কাউকে শেখানোর চেষ্টা করলে সেই পড়া আপনার মনে থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান মনে করেন, কোনো কিছু শেখানোর সময় আপনাকে সেই পড়াটি নিজের মতো গুছিয়ে সংক্ষেপ করে নিতে হয়; করতে হয় আলোচনাও। যা পড়াটি আপনার মাথায় গেঁথে যাওয়ার ক্ষেত্রে দারুণ ভূমিকা রাখে।

নেমোনিক পদ্ধতি

অনেক ছোট তথ্য মনে রাখার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়। ছড়া, গল্প, ছবি, ইত্যাদির মধ্যে তথ্য যুক্ত করে মনে রাখাকে আরও সহজ করাই হচ্ছে এই পদ্ধতির মূল বৈশিষ্ট্য। মূলত ভোকাবুলারি, বিভিন্ন সাল কিংবা যে কোনো ছোট তথ্য মনে রাখার ক্ষেত্রে এই কৌশল হয়ে উঠতে পারে বেশ কার্যকর।

পোমোডোরো পদ্ধতি

পড়াশোনার মাঝখানে মুঠোফোন হাতে নেয়া কিংবা অন্যমনস্ক হয়ে যাওয়া আমাদের এক নিত্য সমস্যা। যার ফলে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে এবং পড়া ঠিকমতো না হওয়ায় তা মনে থাকার সম্ভাবনাও বেশ কমে যায়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পোমোডোরো পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।

১৯৮০ সালের শেষের দিকে ফ্র্যাঞ্চেস্কো নামের এক উদ্যোক্তা এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ইতালীয় শব্দ পমোডোরো অর্থ ‘টমেটো সস’। ফ্র্যাঞ্চেস্কোর টমেটোর আকারের টেবিল ঘড়ি থেকেই মূলত এর নামকরণ। এই পদ্ধতিতে একজন মানুষ মোট ২৫ মিনিট সময় নিয়ে কোনো একটি কাজ করবেন এবং কাজ শেষে ৫ মিনিটের বিরতি নেবেন। ওই পঁচিশ মিনিট নিজেকে অন্য সবকিছু থেকে দূরে রাখতে হবে। আর বিরতির পাঁচ মিনিটকে বেছে নিতে হবে অন্য যে কোনো কাজ কিংবা বিশ্রামের জন্য। এতে করে মূল কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়ে, কাজের প্রভাবও বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এই পদ্ধতি পড়াশোনায় প্রয়োগ করলে পড়া হবে আরও কার্যকর, আর মনেও থাকবে লম্বা সময় পর্যন্ত।

প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম

যারা সারা রাত জেগে সকালে পরীক্ষা দিতে অভ্যস্ত, অনেক সময় দেখা যায় তাদের পরীক্ষা খারাপ হয়। তাই লম্বা সময় পড়াশোনার পর কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নেয়ার বিকল্প নেই। পড়াশোনা শেষে নির্দিষ্ট সময় ঘুনোর পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী জেসিকা পেইন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।